‘কৃষকরাই বাংলাদেশের চালিকাশক্তি’,‘কৃষক বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’ আর এই বাংলার কৃষক, বাংলার চাষা, বাংলার মেহনতি লোকজন কৃষি প্রধান অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশে এক রঙিন স্বপ্ন দেখে চলেছেন।
এদিকে কৃষি প্রধান অপার সম্ভাবনার দেশ ছেড়ে প্রবাসে এসে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কৃষি ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল ও অনবদ্য দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন বাংলার সূর্য সন্তান প্রবাসীরা।
মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদে সমৃদ্ধশালী দেশ কুয়েত। দেশটিতে প্রায় তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, এদের মধ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার প্রবাসী এদেশের মাজারা বা কৃষি কাজের সাথে জড়িত।
কুয়েতে কৃষি অঞ্চল বলে খ্যাত দুটি এলাকা, দেশটির এক প্রান্তে ওয়াফরা ও অন্য প্রান্তে আব্দালী এলাকা। আর এদুটি এলাকায় এসব প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা কুয়েতের সিংহভাগ সবজির চাহিদা মেটাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
কুয়েতের উত্তর সীমান্তের নিকটবর্তী বাসরা (ইরাক) এর ৮০ নম্বর রোডের পূর্বদিকে অবস্থিত কৃষি খামারের একটি বৃহৎ অঞ্চল এর নাম আব্দালি।
ওই এলাকায় কৃষকেরা মনের আনন্দে চাষাবাদ করছেন মাসকলাই, ফুঁল কপি, বাধাঁ কপি,পালং শাক, লাল শাকসহ বিভিন্ন সবজি ও আবাদি ফসল। অবশ্য প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে সবজি উৎপাদন কাজের জন্য তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন বলে জানান তারা।
প্রচণ্ড গরমের দেশ কুয়েত, ৫০ থেকে ৬০ ডিগ্রী তাপমাত্রার এই দেশে শীতকালীন সবজি চাষ করে চলেছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। শীত মৌসুমে শীতকালীন সবজি সহজেই চাষ সম্ভব হলেও গরমের সময় বিশেষ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতে হয় বলে জানান, ওই এলাকায় কৃষি কর্মে নিয়োজিত প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা।
আব্দালি এলাকায় কৃষি কাজসহ অন্যান্য কাজ করে বর্তমানে বেশ স্বাবলম্বী সিলেটের ছমির মিয়া ও সুলেমান আহমেদ। তারা বলেন, এই এলাকায় প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশিরা কৃষি কাজে নিয়োজিত।
আগে নানা সমস্যা থাকলেও এখন খুবেকটা সমস্যা নেই। তবে তাদের প্রতি কুয়েত দূতাবাসের সুদৃষ্টি থাকবে, সেটাই তারা প্রত্যাশা করছেন।
কুয়েতে কৃষি অঞ্চল বলে খ্যাত আব্দালি অঞ্চলে কারো সীমাহীন কষ্টের নেই শেষ আবার কারো জন্য বিরামহীন আনন্দ, ভোগ-বিলাস আর শান্তি ভোগের ঠিকানা।
দেশটির শহুরে উন্নত পরিবেশে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশীদের জীবনযাপন, তাঁরা একটু খানি অবসর পেলেই ছুটে যান ২০০/৩০০ কিলোমিটার দূরের কুয়েতে মরুর বুকে বাংলার লাল-সবুজের স্বদেশ ঠিকানায়।
অন্যদিকে স্থানীয় নাগরিকরা শহরের শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলতে প্রতি সাপ্তাহে ছুঠে যান নিরন্তর শান্তি ভোগের মরু অঞ্চলের ঠুকরো ঠুকরো নীড়ে ‘’খেমায়’’।
-আ হ জুবেদ